তড়িতের সঙ্গে একান্তে কথা, পার্থ কি তৃণমূল ছাড়তে চলেছেন?

131

আপনারা কি ভাবছেন? ভূল দেখছেন?

না, আপনারা একেবারে ঠিকই  দেখেছেন।

হ্যাঁ, একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ এবং রাজ্য সিপিএমের হেভিওয়েট নেতা  তড়িৎবরণ তোপদারের পাশে বসে রয়েছেন রাজ্যের পরিষদীয় সচিব, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি এবং নৈহাটি বিধানসভার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক।

পার্থবাবু গতকাল 28 এপ্রিল সিপিএমের যুব সংগঠনের ডাকে তাদের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন তড়িৎবাবুও |তাঁদের মধ্যে একান্তে অনেক ক্ষণ কথাও হয় |আর জল্পনা ছড়ায়, পার্থ কি তবে তৃণমূল ছাড়তে চলেছেন?

পার্থবাবুর একটি নাটকের দল আছে | সেই দলে নিয়মিত অভিনয় করেন পার্থ | ” মেঘে ঢাকা  তারা ” – র মতো বামপন্থী ঘরানার নাটকেই মূলত অভিনয় করেন নৈহাটির বিধায়ক | ফলত, তড়িৎ – পার্থর সিপিএমের অনুষ্ঠানে পাশাপাশি বসা এবং একান্ত আলাপচারিতা নৈহাটির রাজনীতিতে তুমুল আলোড়ন ফেলে তুলেছে |কেননা, নৈহাটির রাজনীতিতে এ এক  বিরল চিত্র বলা যায়।

অবশ্য  পার্থবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে সিপিএমের বৈরিতা সর্বজনবিদিত। তবুও তিনি রাজনৈতিক সৌজন্যতার বিরল নজির গড়েছেন বারবার। ইন্দিরা ভবনে গিয়ে জ্যোতি বসুর সঙ্গে দেখা করার কথা আমরা সবাই জানি।

মূখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে এই  ৭ বছরের সময় কালে একাধিক নজির গড়েছেন তিনি। প্রাক্তন মূখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অসুস্থতার খবর পেয়ে পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাট গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে  নিজের উদ্যোগে তাঁর ফ্ল্যাট  সংস্কারের ব্যবস্থা করেন তিনি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসূ নবান্নে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিভাবকের সুরে বলেন, ” এ কী বিমানদা, আপনি ছেঁড়া পাঞ্জাবী পরে বেড়িয়েছেন। তার উপরে মাস্ক  নেই। বয়স হয়েছে আপনার।” মূখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “আপনি খুব সাবধানে থাকুন। কোনো অসুবিধা হলে আমাকে জানাবেন।”

একথা শুনে বিমানবাবু আবেগাপ্লুত  হয়ে পড়েছিলেন।

পার্থবাবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন যোগ্য সৈনিক |  নেত্রীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই ধারা বজায় রাখলেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। সিপিএমের যুব সংগঠনের উদ্যোগে নৈহাটি পাড়হাউস মোড়ে নৈশকালীন কমিউনিটি কিচেন চালু হচ্ছে। সেখানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। একদা ব্যারাকপুরের সাংসদ তড়িৎবরণ তোপদারকে দেখে তিনি নেমে আসেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। তাঁকে সাবধানে চলার পরামর্শ দেন পার্থ ভৌমিক।

পার্থবাবুর অনুগামীদের সংযোজন, সিপিএমের যুব সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ এবং সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া নৈহাটির রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য নজির হিসাবে থেকে গেল |

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

sixteen − 11 =