গতকাল 22 জুলাই হালিসহর লোকসংস্কৃতি ভবনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় | এই সভাকে বলা হচ্ছে ” প্রশাসনিক সভা ” |
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সভায় ছিলেন হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া পৌরসভার প্রশাসকমন্ডলীর দুই চেয়ারম্যান, নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুবোধ অধিকারী এবং বিজপুর থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৃষ্ণেন্দু ঘোষ |
এই সভার উদ্দেশ্য ছিল মহৎ | বিজপুরের মানুষের ভালোর জন্যই এই সভা থেকে ঘোষণা করে দেওয়া হয় — 27 জুলাই থেকে 1 আগস্ট পর্যন্ত সমস্ত বিজপুর বিধানসভা অঞ্চলে লকডাউন জারি থাকবে |
এই সভার উদ্দেশ্য মহৎ উদ্দেশ্য হলেও, এই সভায় দুই পৌরসভার দুই প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান , বিজপুর থানার আইসি থাকলেও এই সভাকে ” প্রশাসনিক সভা ” বলা যাচ্ছে না |
কারণ :
এক, এই সভায় দুই পৌরসভার এক্সজিকিউটিভ অফিসাররা ছিলেন না | শহরে লকডাউন জারি করার ক্ষমতা এঁদেরই এক্তিয়ারে | জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে এরা সিদ্ধান্ত নেন |
দুই, প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলাশাসকের কাছে পাঠাতে পারেন না |বরং জেলাশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁদের চলতে হয় | শহরে লকডাউন জারি করার ক্ষমতা প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যানের নেই |
তিন, নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক থাকলেও এই সভায় বিজপুরের বিধায়ক ছিলেন না | বিজপুরের মানুষের ভালোর জন্য ডাকা সভায় বিজপুরের বিধায়ককে সম্ভবত ডাকাই হয়নি | বিরোধী দল গুলির প্রতিনিধিদের এই সভায় ডাকা হয়নি |
চার, এই সভাকে তৃণমূলের দলীয় সভা বলাই সঙ্গত | কারণ, এই সভার আহবায়ক ছিলেন তৃণমূলের জেলা সম্পাদক সুবোধ অধিকারী |অন্য দলের প্রতিনিধিরা এবং বিজপুরের বিধায়ক না – থাকায় এই সভাকে দলীয় সভাই বলা যায় |
পাঁচ, বিজপুর থানার আইসি কোন সভায় বসে শহরে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না |করোনা পরিস্থিতিতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত পৌরসভার এক্সজিকিউটিভ অফিসার এবং জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া নেওয়া যায় না | কারণ, করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত পদক্ষেপ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার মতো বিষয় নয় |
তাই এই সভা থেকে 27 জুলাই থেকে 1 আগস্ট পর্যন্ত বিজপুরে লকডাউন জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও জেলাশাসক এবং এক্সকিউটিভ অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করার পরেই তা ঘোষণা করা উচিত ছিল |