মুকুল ঝরবেন, না মন্ত্রী হবেন?

235

পশ্চিমবঙ্গের আগামী বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতে দিল্লিতে বিজেপির বৈঠক চলছে | খবর, এই বৈঠকেই প্রায় 200 বিধানসভা আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়েও  আলোচনা হচ্ছে | একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, দলের কেন্দ্রীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়ের দেওয়া কিছু প্রার্থীর নাম নিয়ে বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী আপত্তি করায় 22 জুলাই কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে 24 জুলাই বাগডোগরার প্লেন ধরেন মুকুল |

আর জল্পনা ছড়াতে থাকে | রাজ্যের প্রথম শ্রেণীর একটি দৈনিক 25 জুলাই লেখে, মুকুলবাবুর দিল্লির সাউথ এভিনিউ – এর বাড়ির সামনে থেকে রাতারাতি উধাও হয়েছে নরেন্দ্র. মোদির ছবি এবং বিজেপির যাবতীয় পোস্টার | অতএব, বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে মুকুল রায়ের | এই কাগজটিই লেখে, তৃণমূলের সঙ্গে সমান্তরালে যোগাযোগ রেখে চলেছেন মুকুল | কিন্ত, তিনি তৃণমূলে যেতে পারবেন না | কারণ, সারদা – নারদে জড়িয়ে আছে মুকুলবাবুর নাম | বিজেপি ছাড়লে তাই সিবিআই…. |

মুকুলবাবুকে নিয়ে এই সব জল্পনার যথেষ্ট ভিত্তিও আছে | কারণ, 2018 – র  পঞ্চায়েত এবং 2019 – এর লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যের বিজেপির নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মুকুল | পারফর্মেন্সও ছিল বেটার | কিন্তু, তারপরেও রাহুল সিনহা কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য | জিতেই দেবর্ষি চৌধুরী মন্ত্রী | আর আড়াই বছর বিজেপিতে ঘর করে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেও মুকুল রায় শুধুই জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য !

তাই এই বারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটা হেস্তনেস্ত না – করার জন্যই তাঁর  অনুগামীরা  বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে চাপ তৈরি করেছেন | তাঁদের যুক্তি, ভারী কোন পদ না – থাকায় রাজ্যের তৃণমূল সরকার নানান ভাবে তাঁকে বিরক্ত করছে আর তিনি  মুক্ত বিহঙ্গের মতো চলাফেরা করতে পারছেন না | অতএব, হয় মুকুলবাবুকে দলের কেন্দ্রীয় স্তরে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদ হবে অথবা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করতে হবে |

অনেকের অবশ্য ধারণা, মুকুলবাবুর নাম সারদা -নারদে জড়িয়ে থাকার জন্যই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুলবাবুকে গুরুত্বপূর্ণ কোন পদ দিতে চাইছেন  না |  এই ধারণা  অমূলক | কারণ কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে আসা হিমন্তবিশ্ব বর্মার নামও জড়িয়ে আছে সারদা – রোজভ্যালি কেলেঙ্কারির সঙ্গে | কিন্তু, তাঁকে অসম মন্ত্রিসভায় শুধু  স্থানই দেওয়া হয়নি, তিন – চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকও দেওয়া হয়েছে তাঁকে | পুরো উত্তর – পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলির সংগঠনের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়েছে |

তাহলে মুকুলে এতো অবহেলা কেন?  একটি মহলের অনুমান, দলেরই একটি অংশ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কান ভারী করছে এই বলে যে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের সক্রিয় যোগাযোগ রয়েছে |

আর সম্ভবত এই জন্যই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুলবাবুকে ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন | আর মুকুলবাবু তা বুঝে এবার তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন, অনেক হয়েছে, আর নয় | হয় মুকুলে আস্থা রাখো, না হলে ছাড়ো |

তবে বিজেপি তাঁকে ছাড়লেও তিনি মাঠের ধারে বিজেপির দর্শক – আসনেই বসে থাকবেন, মাঠ ছেড়ে যাবেন না |

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 − one =