মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারবেন কি মনোজ ভার্মা?

101

ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশের সঙ্গে তিনি যুক্ত হন একজন IPS হিসাবে।সেটা 1998 সাল | স্বাভাবিকভাবে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। যাঁর বিষয় নিয়ে আজ কথা হচ্ছে তিনি হলেন মনোজ কুমার ভার্মা (সিপি, বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট)।

২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব বাবুর কনভয়তে মাও – হামলা হয় । তারপর জঙ্গল মহল জুড়ে প্রচন্ড ধরপাকড় চলতে থাকে। পাশাপাশি মাওবাদী গতিবিধিও বাড়তে থাকে। সেই সময় বুদ্ধবাবু যে IPS অফিসারের ওপর সবচেয়ে বেশি ভরসা রেখেছিলেন , তিনি হলেন মনোজ কুমার ভার্মা।
হ্যাঁ, এই সেই মনোজ কুমার ভার্মা, যিনি সেই সময়ে দাঁড়িয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর-এর SP হিসাবে “ল এন্ড অর্ডার” খুব দক্ষ ভাবে সামলে ছিলেন।
তারপর সরকার বদলেছে, পুলিশমন্ত্রী বদলেছে। কালের নিয়মে IPS – দেরও পরিবর্তন হয়েছে।
তাই 2011-র পর থেকে মনোজ ভার্মাকে সেভাবে দেখা যেত না। কিন্তু কালের নিয়মেই ২০১৯-এ বারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত ভাটপাড়া জুড়ে অশান্তি চরম শিখরে পৌঁছল । ৮ জনের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটল ।সবাই মুখে মুখে বলতে লাগল,ভাটপাড়া কাশ্মীর উপত্যকার মতো না হয়ে যায়।

আর ঠিক সেই সময় মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, বেস্ট অফ দা বেস্ট ( বুদ্ধবাবুর চোখে) IPS মনোজ ভার্মাকে বারাকপুর-এর CP করে পাঠালেন। সেই মতনই কাজ করে দেখালেন মনোজ ভার্মা।
আসা মাত্রই খুব কম সময়ের মধ্যেই ভাটপাড়া শান্ত হয়ে গেল। মাস খানেকের ওপর যে এলাকাতে মানুষ বোমের আওয়াজ ছাড়া আর কোন আওয়াজ শুনতে পেত না, হাটবাজার- দোকানপাট সব বন্ধ থাকত, দুষ্কৃতী – তান্ডব নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মনোজ ভার্মা তাঁর দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ভাটপাড়াকে নিজের জায়গায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ।
কিন্তু, সেটা বেশি দিন থাকল না। ভাটপাড়া আবার রাজনৈতিক বধ্যভূমিতে পরিণত হতে লাগল । তাহলে কি IPS মনোজ ভার্মার দক্ষতায় খামতি হতে লাগল ? না জনপ্রিয় হিন্দি ওয়েব সিরিজ ” পাতাল লোক”-এর পুলিশ অফিসারের কথাটা পশ্চিম বাংলার পুলিশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে গেল-
“It’s well-oiled machinery. হর পুরজে কো মালুম হ্যাঁ, উসে কেয়া করনা হাঁয়। পর জিসকো নেহি পাতা হোতা, উস পুরজে কো বাদল দিয়া জাতা। লেকিন ইয়ে সিস্টেম নেহি বদলতা ।”
খুব কঠিন কিন্তু বাস্তব কথা। বাংলার পুলিশকে একসময় “স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড”-এর সঙ্গে তুলনা
করা হত ।
সেই গৌরবজনক অধ্যায় কি আর ফিরিয়ে আনা যাবে ? মনোজ ভার্মা কি রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে তাঁর দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারবেন ?
২০১৯-এ তিনি “চিফ মিনিস্টার মেডেল ফর আউটস্ট্যান্ডিং সার্ভিস” পেলেন। সেটা কি শুধুই একটি মেডেল ছিল, নাকি তার পিছনে কর্মদক্ষতাও লুকিয়ে ছিল?
তার প্রমাণ ভবিষ্যৎ দেবে। আমরা নজরে রাখলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 − six =