ব্যারাকপুরের কাঁপায় গেজেটেড অফিসাররাও বিনে পয়সায় রেশনের কেজি কেজি চাল – গম ঘরে তুলছেন !

91

এই রাজ্যের রেশন ব্যবস্থায় লাগামছাড়া দুর্নীতি আর নৈরাজ্য চলছে | রেশন ছাড়া যাঁদের পেটের আগুন নেভে না, তাঁদের অনেকেই বছর দুয়েক আগে  পুরনো কার্ড জমা দিয়ে এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড পাননি | কার্ডের জন্য সারা দিন বারাকপুর 1 ব্লকের পানপুর ভিডিও অফিসে হত্যে দিয়ে পড়ে থেকে এক টুকরো কাগজ পেয়েছেন কেউ কেউ, কিন্ত কার্ড পাননি |এই নিয়ে গ্রাম – শহরের দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে রাগ ও ক্ষোভ জমা হয়ে চলেছে |আজকের এই করোনা – বিধ্বস্ত সময়ে তাঁরা রেশন না – পেলেও এই বারাকপুর – 1 ব্লকের অধীন কাঁপা – চাকলা পঞ্চায়েতের প্রতিটি গ্রামে রেশন নিয়ে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে |

অভিযোগ, এই অঞ্চলের রেশন ডিলাররা বরাদ্দ রেশনের অর্ধেক খাদ্যশস্যই হোলসেলারের কাছে বেচে দেন | তাঁরা এই ” সাহস ” দেখাতে পারেন, কারণ তাঁদের অর্ধেক উপভোক্তাই ডিজিটাল কার্ড পাননি, কিন্তু ” অপদার্থ ” খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই কার্ড না = পাওয়া মানুষ গুলোর নামেও খাদ্যশস্য বরাদ্দ হচ্ছে  | অনেক মানুষ রেশন না – নিলেও 11 নম্বর ফর্মে আবেদন করে জানিয়ে দেননি যে তাঁরা রেশন নেবেন না | এই রকম উপভোক্তাদের সংখ্যা অনেক | দীর্ঘ দিন ধরে এই দফতরের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী যে এখনও রেশন – ব্যবস্থার অ – আ বুঝে উঠতে পারেননি, তার মস্তো বড়ো প্রমাণ এই কার্ড – থাকা কিন্তু রেশন দোকান মুখো না – হওয়া উপভোক্তাদের  জন্যও খাদ্যশস্য বরাদ্দ করে  রেশন ডিলারদের চুরি করতে উৎসাহ দেওয়া এবং এই রেশন না – নেওয়া উপভোক্তাদের চিহ্নিত করে তাঁদের সচেতন করে 11 নম্বর ফর্ম পূরণ করার প্রচার

না – করা | কিন্তু, কার্ড যাঁদের আছে, যাঁরা রেশনের জন্যে হা – পিত্যেশ করে রোদে – বৃষ্টিতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁরাও কী ঠিক ঠিক রেশন পান?

কার্ড না – থাকা ব্যক্তিদের জন্য  বরাদ্দ খাদ্যশস্য এবং কার্ড থাকা কিন্তু রেশন না – নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ শস্য বাজারে 22 থেকে 25 টাকার মধ্যে বেচে দিয়ে  ( রেশনের চাল ও গম ) বিরাট অর্থ আত্মসাৎ করার পরে গরীবদের জন্য বরাদ্দ ( অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনা বা অন্য কার্ডে ) খাদ্যশস্য রেশন ডিলাররা অন্তত ঠিক ঠিকই দেবেন বলে মনে করতে পারেন আপনি |

কিন্ত, সেখানেও ওজনে চুরি ( বেশির ভাগ রেশন দোকানের দাঁড়িপাল্লা দেখে আসুন আজই ), বরাদ্দের চেয়ে কম পরিমান শস্য এবং কাঁকড় মিশ্রিত চাল প্রায়ই দেওয়া হয়ে থাকে | যিনি প্রতিবাদ করেন, তিনি বরাদ্দ ভালো চাল – গম পান | কিন্ত, প্রতিবাদ ক ” জন করেন?

এই ওজনে মারা চাল – আটা লোকাল বাজারে বা পাড়ার মুদিখানার দোকানে বিক্রি করে দেওয়া হয় | করোনা – সন্ত্রাসের মোকাবিলায় লক ডাউনের প্রথম দুই সপ্তাহে গরীবদের বরাদ্দ থেকে চুরি করা এই চালই গেছে তৃণমূল নেতাদের কাছে আর নেতারা সেই রেশন – বঞ্চিত গরীবদের হাতে সেই চালi তুলে দিয়েছেন | ভাবুন, কী বিচিত্র এই রাজ্যের রেশন ব্যবস্থা | এইসব দেখে মনে হতেই পারে, এই রেশন দফতর অভিভাবকহীন  | কোন মন্ত্রীর দায়িত্বে নেই এই দফতর |

এই দফতরের কেচ্ছার  শেষ নেই | এই দফতরের সচিবকে সরিয়ে দিলেই এই দফতর এই রেশন ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে না | কারণ, এই রেশন দুর্নীতির চক্রটি খুবই শক্তিশালী | দীর্ঘ দিন এই দফতরের মন্ত্রী এই চক্রের বাস্তুঘুগুদের প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন বলেই এই চক্র আজ এতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে | তাঁরা পৌরবাবু আর পঞ্চায়েতবাবুদের মদতে গরীব মানুষকে ফেলে দিচ্ছেন খাদ্য সুরক্ষার দ্বিতীয় ক্যাটেগরীতে ( RKSY – 2 ) |

আর গেজেটেড অফিসারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন RKSY – 1 কার্ড | হাতে হাতে প্রমাণ চান?

তা হলে চলে যান বারাকপুর – 1 ব্লকের অধীন কাঁপা – চাকলা পঞ্চায়েতের কাঁপা গ্রামের রেশন ডিলার নিমাই ঘোষের দোকানে | দেখবেন, গরীব মানুষ যখন 3 কেজি চাল আর 3 কেজি গম 66 টাকা জমা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন তাঁদের সামনেই কাঁপা বটতলা এবং কাঁপা বেলে মাঠের দুই গেজেটেড অফিসার বিনে পয়সায় 25 কেজি চাল – গম ( RKSY – 1 কার্ড দেখিয়ে ) বুক ফুলিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন |

গরীব মানুষ তা দেখছেন আর বলছেন — যারা কেড়ে খায় আমার মুখের গ্রাস, তাদের হোক সর্বনাশ ( সর্বনাশ তো শেষ পর্যন্ত হবে দিদিরই ) |

আর নিমাইবাবু বলছেন —- আমার কোন দোষ নেই | দোষ রেশন অফিসারদের, দোষ…….

 

 

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

nineteen + twenty =